What is Hotspot? Explain the Characteristics Hotspot?

 তপ্তবিন্দু (Hotspot) : ভূতাত্ত্বিকদের মতে তপ্তবিন্দু (Hotspot) গুলি প্রকৃতপক্ষে ম্যাগমা-লাভা নিঃসরণ বিন্দু। পৃথিবীতে অসংখ্য ছোট ছে আগ্নেয়মুখ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, সেগুলি থেকে প্রতিনিয়ত ভূঅভ্যন্তরের গলিত ম্যাগমা, লাভার উদগীরণ হচ্ছে ৫০% উদগীরণের কেন্দ্রগুলোই তপ্তবিন্দু নামে পরিচিত।

1963 সালে কানাডার ভূপদার্থবিদ জন টুজো উইলসন (John Tuzo Wilson, 1908-1993), হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে উৎপত্তি নিয়ে গবেষণা করেন এবং গবেষণাপত্রটি ('A possible origin of the Hawaiian Islands) 'Canadia Journal of Physics'-এ প্রকাশিত হয়। ঐ গবেষণা পত্রে সর্বপ্রথম ‘তপ্তবিন্দু' (Hotspot) কথা উল্লেখ করেন। তাঁর মতে উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠের নীচে উষ্ণ অঞ্চলে ভূগাঠনিক পাতের ধীর চলনের ফলে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে সৃষ্টি হয়েছে।

তপ্তবিন্দুর উৎপত্তি (Origin of Hotspot):

ভূপৃষ্ঠস্থ পাতগুলির নীচে বা অন্তঃপাত (interplate) অঞ্চলে ম্যান্টল স্তরের বেশ কিছু স্থান রয়েছে সেখানকার উষ্ণ চারপাশের এলাকার তুলনায় বেশি। এই অতিরিক্ত উত্তপ্ত অঞ্চলগুলিই তপ্তবিন্দু অঞ্চল। অনেক আধুনিক ভূতত্ত্ববিদদে মতে ভূপৃষ্ঠস্থ পাতের নীচের দিকে ক্রমশই তেজষ্ক্রিয় পদার্থের (Radioactive Materials) পরিমাণ বেশি। রেডিয়াম থোরিয়াম, ইউরেনিয়াম প্রভৃতি তেজস্ক্রিয় পদার্থগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রচুর তাপ বিকিরণ করে। ফলে মধ্যভাগের উপাদানগুলের তাপ বৃদ্ধি পায়। এইসব তেজস্ক্রিয় পদার্থের ক্রমাগত তাপবৃদ্ধির ফলে ভূঅভ্যন্তরে আণবিক বিস্ফোরণ ঘটে এবং তপ্তবিন্দুর সৃষ্টি হয়। এই তপ্তবিন্দুগুলি হল প্রকৃতপক্ষে ম্যাগমা লাভা নিঃসরণ বিন্দু। পাতের নীচে লিথোস্ফিয়ারের তলায় ম্যান্টল তরের অনেক গভীরে এই বিন্দুর অবস্থান। এই তপ্তবিন্দুর ঠিক ওপরে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুদগীরণ হয় এবং ভূপৃষ্ঠে ও সমুদ্রবক্ষে আগ্নেয়পর্বত গড়ে ওঠে। পাত সরে গেলে তপ্তবিন্দু বা ম্যাগমা নিঃসরণ বিন্দু তার থেকে সরে যায়। ফলে আগ্নেয়গিরিটি মৃত হয়ে পড়ে। তার জায়গায় পাতের আর একটি নতুন স্থানে নতুন এক আগ্নেয়গিরির জন্ম হয়। তপ্ত-বিন্দু থেকে পাত সরে গেল সেও মরে যায়। তার পরিবর্তে আর এক জায়গায় আর একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির জন্ম হয়। পাত সরে সরে যাওয়ার দরুন এই পাত সীমান্ত বরাবর সারি সারি আগ্নেয় দ্বীপমালা গড়ে ওঠে। কিন্তু নীচে অবস্থিত তন্ত্র-বিন্দু সাধারণভাবে তার স্থান পরিবর্তন করে না।

তপ্তবিন্দুর বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Hotspot) :

(i) তপ্তবিন্দুগুলো অভিসারী ও নিরপেক্ষ পাত সীমান্তে দেখা যায়। 

(ii) পৃথিবীর সমস্ত সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলির নীচে এত তপ্তবিন্দুগুলি রয়েছে।

 (iii) এই অংশে তেজষ্ক্রিয় পদার্থ (থোরিয়াম, ইউরেনিয়াম প্রভৃতি) লক্ষ্য করা যায়। ভূবিজ্ঞানীদের মতে তপ্তবিন্দুতে তেজস্ক্রিয় পদার্থের আধিক্যের কারণে ম্যাগমার ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহ ঘটে, একে প্লিউম (Plume) বলে। প্লিউমের গড় ব্যাস 100 কিমি অনুমান করা হয়। প্লিউমের ঠিক উপরে ভূপৃষ্ঠ প্লিউমের ঊর্ধ্বমুখী চাপে ভূতল প্রথমে স্ফীত হয় এবং ক্রমে সেখানে ভূত্বক বিদীর্ণ হয়ে আগ্নেয়গিরির উৎপত্তি ঘটে। সাহারা উপত্যকা অঞ্চলের টিবেস্টি এরকম একটি প্লিউমের উপর অবস্থিত। অনেকের মতে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ প্লিউমের উপর অবস্থিত।

 (iv) ভূপৃষ্ঠে আনুমানিক 21টি সক্রিয় তপ্তবিন্দু অঞ্চল রয়েছে। এগুলি আগ্নেয়গিরির সাথে যুক্ত বলে এগুলি তপ্তবিন্দু আগ্নেয়গিরি শৃঙ্খল (Hotspot Volcano Chain) তৈরী করেছে। যেমন, হাওয়াই-ইমপেরর অন্তসাগরীয় পর্বত শৃঙ্খল।

 (v) মহাদেশীয় পাতগুলোর মধ্যভাগে বিচ্ছিন্ন আগ্নেয়গিরির অবস্থান থেকে বোঝা যায় যে মহাদেশীয় পাতের নীচে তপ্তবিন্দু কার্যকর রয়েছে, কিন্তু ক্ষুদ্রতলের তপ্তবিন্দুর মতো এগুলি সহজে চিহ্নিত করা যায় না।

Comments

Popular posts from this blog

হড়পা বান (Flash Flood): হড়পা বান কাকে বলে, ইহার বৈশিষ্ট্য ও কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে

মৌসুমি বিস্ফোরণ কাকে বলে ? মৌসুমি বিস্ফোরণের উৎপত্তির কারণ গুলি আলোচনা কর

চলক ও ধ্রুবকের মধ্যে পার্থক্য (Difference between Variable and Constant)