উষ্ণপ্রস্রবণ (Hot Spring) কাকে বলে, ভূতাপ শক্তি (Geothermal Energy) অথবা, ভূতাপ কী?গিজার (Geyser)

১★  উষ্ণপ্রস্রবণ (Hot Spring)

                     মাটির নীচ থেকে যখন উয় জল আপনাআপনি বেরিয়ে আসতে থাকে, তখন তাকে উষ্ণ-প্রস্রবণ (Hot Spring) বলে।

উৎপত্তি : মাটির নীচেরজল (ভৌমজল) পৃথিবীর অভ্যন্তরের উত্তপ্ত শিলা অর্থাৎ, ম্যাগমার সংস্পর্শে এসে গরম হয়ে ফুটতে শুরু করে এবং পৃথিবীপৃষ্ঠে কোনো ফাটল বা দুর্বল স্থান পেলে সেখান দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এসে উয় প্রস্রবণ সৃষ্টি হয়।


 উদাহরণ : পশ্চিমবঙ্গের বক্রেশ্বর, বিহারের রাজগির প্রভৃতি স্থানে উয় প্রস্রবণ দেখা যায়।



২◆ভূতাপ শক্তি (Geothermal Energy) ★★ অথবা, ভূতাপ কী?

             পৃথিবীর কেন্দ্রের তাপ ধীরে ধীরে বাইরের দিকে অর্থাৎ, পৃথিবীপৃষ্ঠের দিকে আসতে থাকে। এই তাপশক্তিকে ভূতাপ শক্তি বলে৷ ভূতাপ শক্তি একটি অচিরাচরিত শক্তি।

ব্যবহার : প্রবহমান ও দূষণহীন এই ভূতাপ শক্তি বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে লাগে।

বিদ্যুৎ উৎপাদন : 1904 সালে ইটালির লারডেয়াললোতে প্রথম ভূতাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়। বর্তমানে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ভূতাপ শক্তি উৎপাদনে প্রথম স্থান অধিকার করে। ফিলিপাইন্স দ্বিতীয় ও মেক্সিকো তৃতীয় স্থান অধিকার করে। আইসল্যান্ড দেশের মোট বিদ্যুতের 30% ভূতাপ শক্তির দ্বারা পুরণ করে। এ ছাড়া রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপে, নিউজিল্যান্ডের ওয়াইরাকেতে ভূতাপ শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র আছে। ভারতে হিমাচল প্রদেশের মণিকরণে একটি বড়ো ভূতাপ শক্তি চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে।

সুবিধা:- এই শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে কয়লা, খনিজ তেলের ব্যবহার কমানো যায়। ও এই শক্তি ব্যবহারে পরিবেশ


৩◆ গিজার (Geyser) *

        যে প্রস্রবণে ভূগর্ভস্থ উত্তপ্ত জল ও বাষ্প নির্দিষ্ট সময়ান্তরে প্রবল বেগে ফোয়ারার মতো উৎক্ষিপ্ত হয় তাকে গিজারবলে।

          অর্থ: আইসল্যান্ডীয় শব্দGeysir থেকে
'Geyser' শব্দটিএসেছে, যার অর্থগর্জন করা।

( উৎপত্তি : দিকে কোনো গভীর নলপথে ভৌমজল প্রবেশ করলে তার উদ্বৃতা 100°C ছাড়িয়ে যায়। ওপরের জলের চাপে ভূগর্ভের এই জলের স্ফুটনাঙ্ক বৃদ্ধি পায়। পরিচলন প্রক্রিয়ায় এই অতি উত্তপ্ত (200°C) জলের কিছুটা অংশ ওপরে উঠলে জলের চাপ হ্রাস পায়। ফলে স্ফুটনাঙ্ক কমে যায় এবং কিছু জল বাষ্পে পরিণত হয়। এই বাষ্প নলপথের উত্তপ্ত জলকে ফোয়াররমত বের করে আনে।

উদাহরণ : আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ইয়োলোস্টোন ন্যাশনাল পার্ক-এর ওল্ডফেথফুল গিজার থেকে প্রায় 45 মিনিট অন্তর উদ্বু জল উৎক্ষিপ্ত হয়।





৪★ . প্যানজিয়া ও প্যানথালাসা কী ? *

'Pangea' (প্যানজিয়া)-র 'Pan' এর অর্থ 'All' বা ‘সমস্ত’ এবং 'Gia'-র অর্থ ‘পৃথিবী’ বা ‘ভূখণ্ড’। আজ থেকে প্রায় 50 কোটি বছর আগে পৃথিবীর সমস্ত স্থলভাগ একত্রে একটা বিশাল ভূখণ্ডরূপে অবস্থান করত। একে প্যানজিয়া বলা হয়। আবহবিদ অ্যালফ্রেড ওয়েগনার প্যানজিয়া নাম দেন। প্যানজিয়া পরবর্তীকালে দুটি অংশে বিভক্ত হয়। যথা— ↑ ১★  উত্তরাংশের নাম লরেশিয়া 

     ২★  দক্ষিণ অংশের নাম গণ্ডোয়ানাল্যান্ড।


প্যানথালাসা: 'Panthalasa' (প্যানথালাসা)-র 'Pan'-এর অর্থ ‘সমস্ত’ এবং 'Thalasa'-র অর্থ ‘সমুদ্র’। প্যানজিয়াকে ঘিরে পৃথিবীর সমস্ত মহাসাগর একত্রে একটি বিশাল মহাসাগররূপে অবস্থান করত। একে আবহবিদ আলফ্রেড ওয়েগনার প্যানথালাসানাম দেন৷



 ত্রিপাত সম্মেলন (Tripple Junction)

পাতের চলনের ফলে তিনটি অভিসারী পাত যখন পরস্পরের মুখোমুখি অগ্রসর হয়, তখন গঠিত হয় ত্রিপাত সম্মেলন (Tripple Junction)। তিনটি পাত যেখানে পরস্পরের সম্মুখীন হয়, সেখানে 'Y' আকৃতি ধারণ করে। যেখানে এই তিনটি পাত পরস্পরের মুখোমুখি আসে, সেখানে একটি পাত অপর পাতের নীচে প্রবেশও করতে পারে, আবার অনেক ক্ষেত্রে পরস্পর পরস্পরের থেকে দূরেও সরে যেতে পারে। তবে 'Y' আকৃতির ন্যায় অবস্থিত তিনটি পাতের মধ্যে দুটি পাত সক্রিয় অবস্থায় থাকলেও একটি পাত প্রায় নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে। এই নিষ্ক্রিয় পাতকে অওলাকোজেন বলে।


উদাহরণ : আন্টার্কটিকা পাত, নাজকা পাত ও প্রশাস্ত মহাসাগরীয় পাতের মিলনস্থলে এই ত্রিপাত সম্মেলন সৃষ্টি হয়েছে।







Comments

Popular posts from this blog

হড়পা বান (Flash Flood): হড়পা বান কাকে বলে, ইহার বৈশিষ্ট্য ও কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে

মৌসুমি বিস্ফোরণ কাকে বলে ? মৌসুমি বিস্ফোরণের উৎপত্তির কারণ গুলি আলোচনা কর

চলক ও ধ্রুবকের মধ্যে পার্থক্য (Difference between Variable and Constant)