পাত সীমানার শ্রেণিবিভাগ (Classification of Plate Boundaries) :
১) গঠনকারী পাত সিমান্ত:
যখন একটি পাত অপর একটি পাত থেকে দূরে সরে যায় তখন ভূ-গর্ভস্থ ম্যাগমা বেরিয়ে এসে নতুন ভূ-ত্বক সৃষ্টি করে। ম্যাগমা সঞ্চয়ের ফলে ভূ-ত্বক সৃষ্টি হয় বলে একে গঠনকারী পাত সিমান্ত বলে। প্রধানত আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে (মধ্য আটলান্টিক শৈলশিরা) দুপাশের পাত সরে যাওয়ায় এই ধরনের গঠনকারী সীমান্ত গড়ে উঠেছে।
গঠনমূলক পাত সিমান্তে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প হয়ে থাকে। ভূমিকম্পের ফোকাস বা কেন্দ্র খুব কম গভীরতায় দেখা যায়। এখেত্রে ভূমিকম্পের কেন্দ্র ২৫ কিমি থেকে ৩৫ কিমি এর মধ্যে অবস্থান করে থাকে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ৬০ কিমি গভীরতাতেও ভূমিকম্পের গভীরতা দেখা যায়। এর ফলে ফাটল, চ্যুতি এবং অগ্ন্যুৎপাতের সৃষ্টি হয়। এই কারনেই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
উদাহরন:
উত্তর ও দক্ষিন আমেরিকান পাত এবং আফ্রিকা ও ইউরোপীয় পাতের সরনের ফলে মধ্য আটলান্টিক শৈলশিরার সৃষ্টি হয়েছে।
২) বিনাশকারী পাত সিমান্ত:
যখন দুটি পাত পরস্পরের দিকে অগ্রসর হয় তখন সেই পাত সীমান্তকে অভিসারী পাত সীমান্ত (Convergent plate boundary) বলে। দুটি পাতের মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে ভারী পাতটি হালকা পাতের নিচে প্রবেশ করে ফলে ভূমিরূপের অবনমন ঘটে বলে একে বিনাশকারী পাত সীমান্ত (Destructive plate boundary) বলা হয়। অভিসারী পাত সীমান্ত বরাবর ভূ-ত্বকের আংশিক অবনমন ঘটে বলে একে SUBDUCTION ZONE বা অধঃপাত মন্ডল বলা হয়। পাতের অবস্থান অনুসারে বিনাশকারী পাত সীমান্তকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়-
ক) মাহাদেশ-মহাসাগর পাত সীমান্ত
খ) মহাসাগর-মহাসাগর পাত সীমান্ত
গ) মহাদেশ-মহাদেশ পাত সীমান্ত
৩) নিরপেক্ষ পাত সিমান্ত:
কোনো কোনো ক্ষেত্রে একটি চ্যুভি বরাবর দুটি পাত পাশাপাশি অবস্থান করে একে অপরের বিপরীত দিকে চালিত হয়। এক্ষেত্রে পাতের গঠন ও ধ্বংশ কিছুই হয়না। একে নিরপেক্ষ চ্যুতি (Transforms fault) বলে।
উদাহরন:- ক্যালিফোর্নিয়ার সানআন্দ্রিস চ্যুতি বরাবর প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাতের কিছু অংশ উত্তর পূর্ব দিকে এবং উত্তর আমেরিকার কিছু অংশ দক্ষিন পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই অঞ্চলটিতে ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
গঠিত ভূমিরুপ:- শৈলশিরা, ফাটল যুক্ত উপত্যকা এবং চ্যুতি অঞ্চলের বিস্তার ঘটে থাকে।
Comments
Post a Comment