Human Geography: Introduction to Human Geography(Chapter-1)
■ মানবীয় ভূগোলের সংজ্ঞা (Definition of Human Geography) :
"Human Geography is the Science which studies spatial distribution of human being and cultural facts on the surface of the Earth". অর্থাৎ “মানবীয় ভূগোল এমনই এক বিজ্ঞান, যা মানুষের স্থানিক বণ্টনের সাথে সাথে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ নিয়ে আলোচনা করেছেন।” মানবীয় ভূগোলের সংজ্ঞাগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল—
1.) ই. সি. সেম্পল (Ellen Churchill Semple, January 8, 1863 - May 8, 1932) :
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মানবীয় ভূগোলবিদ ই.সি. সেম্পল (1911) বলেন, পরিবর্তনশীল মানুষ ও অস্থিতিশীল পৃথিবীর আন্তঃসম্পর্কই আলোচনা করে মানবীয় ভূগোল।
2. ফ্রেডরিক র্যাটজেল (Friedrich Ratzel, August 30, 1844 August 9, 1904):-
3. ভিদেল দ্য ল্য ব্লাচে (Raul Vidal de La Blache, January 22, 1845 April 5, 1918) :
4. অ্যালবার্ট দেমানজিওন (Albert Demangeon, 13 June, 1872 - 25 July, 1940) :
5. ম্যাক্সিমিলন সরি (Maximilien Sorre, 16 July, 1880 - 10 August, 1962) :
6. জ্যাকি স্মিথ (Jackie Smith) :
জ্যাকি স্মিথ তাঁর গ্রন্থ ‘Dictionary of Geography’ তে বলেছেন যে মানবীয় ভূগোল হল, মানুষের বা কর্মকাণ্ডের ফলে সৃষ্ট বা কর্মকাণ্ডের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত ভূপৃষ্টের ঘটনা বা বিষয় সমূহের ভৌগোলিক আলোচনাই হল মানবীয় ভূগোল ৷
7. আলেকজান্ডার ভন হামবোল্ট (Friedrich Wilhelm Heinrich Alexander Von Humboldt, 14 September, 1769 6 May, 1859) :
জার্মানির ভূগোলবিদ আলেকজান্ডার ভন হামবোল্ট এর মতে, কোন স্থান বা এলাকায় বসবাসকারী মানব গোষ্ঠী সম্পর্কে ব্যাখ্যা ও বিবরণ প্রদান করা মানবীয় ভূগোলের কাজ।
■ মানবীয় ভূগোলের উপাদান সমূহ (Components of Human Geography) :
পৃথিবী বৈচিত্র্যময়। বৈচিত্র্য কেবল প্রাকৃতিক পরিবেশে নয়, মানুষের ক্ষেত্রেও। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে যেসব মানুষ বাস করেন তাঁদের চেহারা, আচার আচরণ ও পোশাক পরিচ্ছদ যেমন বিভিন্ন, তেমনি ভাষা-ধর্ম শিক্ষা-চিন্তাধারাও এক নয়। এক এক জায়গায় বাসগৃহ নির্মাণ প্রণালী, খাদ্যগ্রহণ প্রণালী, জীবনযাপন প্রণালী এক এক রকম। সেই অনুযায়ী এক এক জায়গায় এক এক রকম শাসনতন্ত্র ও আইনকানুন গড়ে উঠেছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যেসব উপাদান ও উপকরণ মানুষের জীবন ও জীবিকার উপর প্রভাব বিস্তার করে তাকে মানবীয় ভূগোলে বলা হয় পরিবেশ। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের জীবন ধারণ প্রণালীর মধ্যে যে পার্থক্য আমরা দেখি, তা প্রধানত নির্ভর করে পরিবেশের পার্থক্যের উপর।
মানবীয় ভূগোল দুটি পরিবেশের উপাদান নিয়ে গঠিত। এগুলি হল—
A. প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান
B. সাংস্কৃতিক পরিবেশের উপাদান
এই সম্পর্কে নিম্নে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলঃ
A. প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান (Components of Physical Environment) :
যে কোন অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ পাঁচটি উপাদান নিয়ে গড়ে ওঠে। এগুলি হল ---
(ক) গোলকরূপে পৃথিবী (The Earth as a Globe) : গোলকরূপে পৃথিবী তার অক্ষের (Axis) ওপর - কোণে হেলে সূর্যের চারদিকে পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করছে এবং এর ফলে দিন রাত্রি হচ্ছে। 66 পৃথিবীর অক্ষ 66° কোণে হেলে থাকার জন্য দিন রাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি হয়। এভাবে আবর্তন করতে করতে 365 দিনে পৃথিবী সূর্যকে সম্পূর্ণ প্রদক্ষিণ করে। এর ফলে ঋতু-পরিবর্তন হয়।
পৃথিবী গোলাকার বলে কোথাও সূর্যরশ্মি লম্বভাবে, কোথাও বা তির্যকভাবে কিরণ দেয়। এর ফলে অক্ষাংশ (Latitude) অনুযায়ী পৃথিবীতে উষ্ণ ও শীতলস্থান গড়ে ওঠে। নিম্ন অক্ষাংশে অবস্থিত নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্য লম্বভাবে কিরণ দেয় ফলে উষ্ণতা খুব বেশি। উচ্চ অক্ষাংশে মেরু প্রদেশে সূর্য তির্যকভাবে কিরণ দেয় বলে এখানে শীত খুব বেশি। এই উষ্ণতার পার্থক্যের জন্যই দুই জায়গার মানুষের জীবনযাপন প্রণালী দু'রকম। সুতরাং পৃথিবীর গোলক আকার মানবীয় ভূগোলের প্রধান উপাদান।
(খ) ভূ-প্রকৃতি বা ভূমিরূপ (Landforms) :
ভূ-পৃষ্ঠে পর্বত, মালভূমি ও সমভূমি – এই তিনটি প্রধান ভূমিরূপ - দেখা যায়। ভূমিরূপ মানুষের উপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে, এর ফলে অর্থনৈতিক জীবনের তারতম্য হয় –
● পার্বত্যভূমির কঠিন শিলাগঠিত বন্ধুর ভূ-প্রকৃতি একদিকে কৃষিকার্য ও শিল্পকার্যের ক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টি করে। আবার অপরদিকে তেমনি পার্বত্য পরিবেশে মূল্যবান বৃক্ষাদি জন্মায়। তাই মূল্যবান কাষ্ঠ সম্পদের সরবরাহ সত্ত্বেও প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের দরুন পার্বত্য অঞ্চল জনবিরল এবং অনুন্নত। প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশে বসবাসের দরুন পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসীরা সাহসী, পরিশ্রমী, কষ্টসহিষ্ণু এবং অধ্যাবসায়ী হয়ে থাকে।
• ভূ-পৃষ্ঠের মালভূমিগুলো সাধারণভাবে কৃষিকার্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার পক্ষে অনুপযোগী হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু কোন কোন মালভূমি অঞ্চল খনিজ সম্পদের প্রাচুর্যহেতু শিল্পোন্নত হয়ে থাকে। উদাহরণ হিসেরে ছোটনাগপুর মালভূমি ও কর্ণাটকের মালভূমির কথা বলা যায়। এই দুটি অঞ্চলে বিভিন্ন প্রকার খনিজ দ্রব্য উত্তোলিত হয়। তাই এই দুটি মালভূমি অঞ্চলের অধিবাসীদের জীবনযাত্রা পৃথিবীর অন্যান্য মালভূমি অঞ্চলের অধিবাসীদের জীবনযাত্রা ও অর্থনৈতিক অবস্থার থেকে উন্নততর।
(গ) মৃত্তিকা (Soil) :
মানুষের কাছে মৃত্তিকার ভূমিকা বিশাল। নিম্নলিখিত বিষয়গুলির ক্ষেত্রে মৃত্তিকা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
(i) কৃষি জমির প্রকৃতিঃ মানুষের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক কার্যকলাপ কৃষিকাজ। এই কৃষিকাজের সাফল্য নির্ভর করে মাটির গুণাগুণের উপর। উর্বর মাটি যেমন চাষের পক্ষে আদর্শ, তেমনি অনুর্বর মাটি চাষের পক্ষে অনুপযুক্ত। উদাহরণঃ দাক্ষিণাত্যের কালোমাটি বা সারনোজেম মাটি তুলো চাষের পক্ষে আদর্শ মাটি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বড় নদী উপত্যকাগুলির উন্নতি ও সমৃদ্ধির মূলে আছে সেখানকার পলিগঠিত উর্বর মাটি।
(ii) ফসলের প্রকৃতি : সব ধরনের ফসল একই রকম মাটিতে উৎপন্ন হয় না। বিভিন্ন ফসলের চাষের জন্য বিভিন্নরকম মাটি উপযুক্ত। উদাহরণ : কালোমাটিতে যেমন তুলোর চাষ ভাল হয়, তেমনি পলি মাটিতে ধান এবং লোহা-সমৃদ্ধ মাটিতে চা চাষ ভাল হয়।
Comments
Post a Comment