Ecosystem :বাস্তুতন্ত্র সম্পর্কিত সমস্ত রকমের গুরুত্বপূর্ণ (Importent Question & Answer)-100%গ্যারান্টি
বাস্তুতন্ত্র (Ecosystem)
1. বাস্তুতন্ত্রের সজীব বা বায়োটিক উপাদান কয়প্রকার ও কী কী?
বাস্তুতন্ত্রের সব্জীব উপাদানগুলিকে দুভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
(1) স্বভোজী (Autotrop উৎপাদক (Producers) ও
(2) পরভোজী (Heterotrophs) বা খাদক (Consumers) উপাদান। |
2. স্বভোজী জীব বা উৎপাদক বা অটোট্রফিক উপাদান কী?
স্বভোজী উপাদান (Autotrophic Components) বলতে বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে সেইসব জীবকে যেগুলি সৌরশক্তি শোষণ করে কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন প্রভৃতি বিভিন্ন অজৈব উপাদানের স খাদ্য তৈরি করতে পারে।
শৈবাল, সবুজ উদ্ভিদ, সালোক-সংশ্লেষকারী ব্যাকটেরিয়া প্রভৃতি হল বাচ্চা, স্বভোজী উপাদানের উদাহরণ।
এই উপাদানগুলি শুধুমাত্র খাদ্য প্রস্তুত করতে পারে বলে অর্থাৎ নিজেদের খাদ্য সংশ্লেষে সক্ষম হ এদের উৎপাদক বা প্রডিউসার (Producers) বলে।
3. ফাইটোসিনোসিস কী?
ফাইটোসিনোসিস হল উৎপাদক বা স্বভোজী জীব। বায়োজিওসিনোসিসের অন্তর্গত পরস্পর কিছু সমস্ত উদ্ভিদ সম্প্রদায়কে ফাইটোসিনোসিস (Phytocenosis) বলে।
4. খাদক বা পরভোজী বা হেটেরোট্রফিক উপাদান কী?
বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে যে সমস্ত জীব নিজের খাদ্য উৎপাদন করতে পারে না এবং খাদ্যের জন্য উৎপাদনে ওপর নির্ভরশীল, তাদের খাদক বা পরভোজী উপাদান (Heterotrophic Components) বা কনজিউমার (Consumers) বলে।
5. খাদ্যাভ্যাস বা খাদ্যের ধরন অনুসারে খাদক প্রাণীদের কয় ভাগে ভাগ করা হয় ও কী কী?
খাদ্যাভ্যাস বা খাদ্যের ধরন অনুযায়ী খাদক প্রাণীদের তিন ভাগে ভাগ করা হয়, যেমন -
(1) তৃণভোজী খাদক বা হার্বিভোর (Herbivores),
(2) মাংসাশী-স্তন্যপায়ী খাদক বা কার্নিস (Carnivores), এবং
(3) সর্বভুক খাদক বা ওমনিভোর (Omnivores)।
6.তৃণভোজী খাদক বা হার্বিভোর কাদের বলে?
খাদ্যের জন্য যে সমস্ত খাদক প্রাণী গাছপালা, লতা-পাতা খেয়ে বেঁচে থাকে তাদের মারুন। তৃণভোজী খাদক বা হার্বিভোর (Herbivores) বলে। যেমন- গোরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি।
7. মাংসাশী খাদক বা কার্নিডোর কাদের বলে?
খাদ্যের জন্য যে সমস্ত মাংসাশী প্রাণী খাদক হিসেবে অন্যান্য প্রাণীদের খেয়ে বেঁচে থাকে মাংসাশী খাদক প্রাণী বা কার্নির্ভোর (Carnivores) বলে। যেমন— বাঘ, সিংহ ইত্যাদি।
8. সর্বভুক খাদক বা ওমনিভোর কী?
খাদ্যের জন্য যে সমস্ত প্রাণী খাদক হিসেবে উদ্ভিদ এবং অন্যান্য জীবজন্তুকে খেয়ে বেঁচে থাকে তাদের সর্বভুক খাদক বা ওমনিভোর (Omnivores) বলে। যেমন— মানুষ।
9 .জুসিনোসিস কী?
জুসিনোসিস হল প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্তরের খাদক। জুসিনোসিস (Zoocenosis) বলতে বায়োজিওসিনোসিসের অন্তর্গত সমস্ত প্রাণী সম্প্রদায়কে বোঝায়, যারা পরস্পর খাদ্যখাদক সম্পর্কের ভিত্তিতে ক্রিয়া করে।
10. প্রাথমিক খাদক কাদের বলে?
যে সমস্ত খাদক খাদ্যের জন্য সরাসরি উৎপাদক অর্থাৎ সবুজ উদ্ভিদের ওপর নির্ভর করে তাদের প্রাথমিক খাদক বলে। এরা সবাই শাকাশী বা তৃণভোজী প্রাণী। যেমন— গোরু, ভেড়া, ছাগল, শামুক, কিনুক ইত্যাদি। ইংরেজি ভাষাস্তরে প্রাথমিক খাদকদের 'প্রাইমারি কনজিউমার' (Primary Consumers) বলে।
11. দ্বিতীয় স্তরের উৎপাদক (Secondary Consumers) কাদের বলে?
প্রাথমিক খাদকদের দ্বিতীয় স্তরের উৎপাদক (Secondary Consumers) বলা হয়। যেমন- গোরু, ভেড়া, ছাগল প্রভৃতি শাকাশী বা তৃণভোজী প্রাণী। এরা দ্বিতীয় স্তরের উৎপাদক কারণ মাংসাশী খাদক প্রাণীদের অর্থাৎ শিকারি (predator) মাংসাশী (carnivores) প্রাণীদের এরা খাদ্যের জোগান দেয়। যেমন সাভানা তৃণভূমিতে জেব্রা (প্রাথমিক খাদক) হল সিংহের খাদ্য। তাই জেব্রা দ্বিতীয় স্তরের উৎপাদক।
12 .দ্বিতীয় স্তরের খাদক বা গৌণ খাদক কাদের বলে?
যে সমস্ত খাদক-প্রাণী খাদ্য হিসেবে তৃণভোজী প্রাণীদের বা প্রাথমিক খাদকদের খায়, তাদের দ্বিতীয় স্তরের খাদক বা গৌণ খাদক বলে। এরা মাংসাশী প্রাণী। যেমন— কুকুর, বিড়াল, জলজ পতঙ্গ, ছোটো মাছ, চিংড়ি ইত্যাদি। ইংরেজি ভাষাত্তরে দ্বিতীয় স্তরের খাদকদের 'সেকেন্ডারি কনজিউমার' (Secondary Constimers) বলে।
13. তৃতীয় স্তরের খাদক বা প্রগৌণ খাদক কাদের বলে?
যে সমস্ত খাদক-প্রাণী খাদ্য হিসেবে দ্বিতীয় স্তরের খাদক বা গৌণ খাদকদের ওপর নির্ভর করে, তাদের - তৃতীয় স্তরের খাদক বা প্রগৌণ খাদক বলে। ইংরেজি ভাষান্তরে তৃতীয় স্তরের খাদকদের ‘টার্সিয়ারি কনজিউমার’ (fortiury Consumers) বলে। যেমন- শোল, বোয়াল প্রভৃতি বড়ো মাছ, বক, পানকৌড়ি, উদ্বেড়াল, সাপ, মানুষ ইত্যাদি।
14. চতুর্থ স্তরের খাদক বা কোয়াটারনারি খাদক কাদের বলে?
যে সমস্ত খাদক প্রাণী তৃতীয় স্তরের খাদক বা প্রগৌণ খাদকদের ওপর খাদ্যের জন্য নির্ভর করে, তাদের চতুর্থ স্তরের খাদক বা ‘কোয়ার্টারনারি খাদক' (Qarternary consumers) বলে। যেমন— তৃতীয় স্তরের মানত হল সাপ। সাপকে খায় বাজপাখি (hawk)। সুতরাং বাজপাখি হল চতুর্থ স্তরের খাদক।
15 . মাইক্রোকনজিউমার বা ডিকম্পোজার বা বিয়োজক কী?
বাস্তুতন্ত্রের যে সমস্ত উপাদান মৃতজীবী, অর্থাৎ যারা মৃত উদ্ভিদ ও খাদকদের মৃতদেহ বিয়োজিত করে ধারা সরল রাসায়নিক যৌগে পরিণত করে তাদের বিয়োজক বলে। যেমন—ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, ইত্যাদি। বিয়োজকদের ইংরেজিতে ‘ডিকম্পোজার’ বা ‘মাইক্রোকনজিউমার' (Decomposers or Micniconsumers) বলে। এরা অনুজীব।
16.ইকোক্লাইন কী?
দুটি আলাদা বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে মিশ্রণের প্রবণতা (transition tendency) হল ইকোক্লাইন (Ecocline) | যেমন, শিলিগুড়ি বা জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার পথে গাছপালার দিকে নজর রাখলেই উদ্ভিলে মধ্যে পরিবর্তন প্রবণতা আমাদের চোখে
17 . এজ-এফেক্ট বলতে কী বোঝায়?
দুটি পাশাপাশি অবস্থিত বাস্তুতন্ত্র বা বায়োমের সীমানাবর্তী অঞ্চলে পারস্পরিক প্রভাবে জীবগোষ্ঠীর গঠন ও প্রজাতির সংখ্যার মধ্যে যে পরিবর্তন ঘটে তাকে এজ-এফেক্ট (Edge-effect) বলা হয়।
18. বাস্তুতন্ত্র কীভাবে কাজ করে? বাস্তুতন্ত্রের কর্মপ্রণালী ধরনের?
বাস্তুতন্ত্র বা বাস্তুরীতির মধ্যে চারটি পর্যায়ে কাজ হয়। যেমন--—
(1) সূর্য থেকে আগত সৌরশক্তি সবুজ উদ্ভিদ বা স্বভোজী গোষ্ঠী শোষণ করে।
(2) মাটি, জল ও বায়ু থেকে অর্থাৎ পরিবেশ থেকে নানা ধরনের অজৈব লবণ বা উপাদান সংগ্রাহ করে সবুজ উদ্ভিদরা জৈব উপাদান তৈরি করে।
(3) স্বভোজী সবুজ উদ্ভিদ বা উৎপাদকদের তৈরি জৈব পদার্থ খাদ্য-খাদক সম্পর্কের মাধ্যমে বিভিন্ন খাদক স্তরে শক্তি হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে খাদক প্রাণীরা সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ পায় ও বংশ বিস্তার করে।
(4) উদ্ভিদ ও প্রাণীরা মারা যাবার পর তাদের মৃতদেহ বিয়োজকদের সাহায্যে বিয়োজিত হয়ে অৈ লবণ হিসেবে পুনরায় প্রাকৃতিক পরিবেশে ফিরে যায়।
19.“নিচ” (Niche) বা “নিসে” বলতে কী বোঝায়?
নিজের বাসভূমি অর্থাৎ হ্যাবিট্যাট (Habitat)-এর মধ্যে পরিবেশ অনুসারে প্রাণীর জীবনধারণের উপর ও অবস্থাকে “নিচ” (Niche) বা “নিসে” (Niche) বলে। যে প্রাণী তার বাসভূমির যে এলাকা থেকে তা প্রয়োজনীয় পুষ্টি সংগ্রহ করে, সেটাই তার “নিচ” বা “নিসে” (Niche)। যেমন— পরাশ্রয়ী উদ্ভিদের (যথা অর্কিড) নিচ বা নিসে হল বড়ো গাছ, কেউটে সাপের নিচ হল জঙ্গল, নদীর পাড়, শিলার ফাটল ইত্যাদি।
20. উৎপাদক ও খাদক প্রাণীদের মধ্যে পার্থক্য ?
উৎপাদক ও খাদক প্রাণীদের মধ্যে কয়েকটি মূল পার্থক্য রয়েছে। যেমন-
1. সবুজ উদ্ভিদ বা উৎপাদকরা নিজেরা নিজেদের খাদ্য তৈরি করে ও গ্রহন করে ।
অন্যদিকে
খাদক প্রাণীরা পরভোজী শ্রেণীর । এরা নিজেদের খাদ্য উৎপাদন করতে পারে না তাই এরা উদ্ভিদ অন্য প্রাণীদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে ।
2. উৎপাদক সৌর শক্তিকে সরাসরি কাজে লাগাতে পারে ও দেহে আবদ্ধ করতে পারে ।
অন্যদিকে।
খাদক প্রাণী শক্তিকে নিজেদের দেহে আবদ্ধ করতে পারে না ।
3. উৎপাদকের শরীরে ক্লোরোফিল আছে
অন্যদিকে
এদের শরীরে ক্লোরোফিল নেই।
4. উৎপাদকরা সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন তৈরি করতে পারে। ফলে এরা পরিবেশে অক্সিজেনের জোগান দেয়।
অন্যদিকে
খাদক প্রাণীরা অক্সিজেন উৎপাদন করছে। পারে না। এরা পরিবেশ থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে।
21.খাদক ও বিয়োজকের মধ্যে পার্থক্য কী?
খাদক ও বিয়োজকদের মধ্যে মূল পার্থক্য হল----
খাদকরা (Consumers) উৎপাদকদের বা অন্যান্য প্রাণীদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। যেমন- গোরু,ছাগল, বাঘ, সিংহ, মানুষ।
বিয়োজকরা (Decomposers) আণুবীক্ষণিক জীব। মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীদের শরীরের জটিল যৌগগুলিকে ভেঙে সরল রাসায়নিক যৌগে পরিণত করাই এদের কাজ। যেমন- ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া।
22.স্থলজ বাস্তুতন্ত্র ও জলজ বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
স্থলজ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য হল-----
1. স্থলজ বাস্তুতন্ত্র স্থলভাগে অবস্থিত। চারটি প্রধান বাস্তুতন্ত্রের সমষ্টি হল স্থলজ বাস্তুতন্ত্র, যেমন – পার্বত্যভূমি, নিম্নভূমি, উষ্ণ মরুভূমি ও শীতল মরুভূমির বাস্তুতন্ত্র।
অন্যদিকে
জলজ বাস্তুতন্ত্রে জলভাগে অবস্থিত। দুটি প্রধান বাস্তুতন্ত্রের সমষ্টি হল জলজ বাস্তুতন্ত্র, যেমন – স্বাদু জল ও লোনা সাগরীয় জলের বাস্তুতন্ত্র।
2. স্থলজ বাস্তুতন্ত্র স্থলভাগের উদ্ভিদ।
অন্যদিকে
জলজ বাস্তুতন্ত্র ক্ষুদ্র এককোশী শৈবাল – ফাইটো -প্ল্যাংকটন এবং ক্ষুদ্র জীব জুপ্ল্যাংকটন
3. স্থলজ বাস্তুতন্ত্র খাদকপ্রাণী স্থলভাগের ছোটো ও বড়ো প্রাণী।
অন্যদিকে
জলজ বাস্তুতন্ত্র খাদকপ্রাণী ছোটো ও বড়ো জলজ প্রাণী ।
4. স্থলজ বাস্তুতন্ত্র পুষ্টির উৎস- জল, বায়ু, মাটি।
অন্যদিকে
জলজ বাস্তুতন্ত্র পুষ্টির উৎস-জলে দ্রবীভূত গ্যাস ও পুষ্টিমৌল
Comments
Post a Comment