মেঘ ও কুয়াশার মধ্যে পার্থক্য (Difference between cloud and fog )
মেঘ ও কুয়াশার মধ্যে পার্থক্য (Difference between cloud and fog):
আপাতদৃষ্টিতে মেঘ ও কুয়াশা একই মনে হলেও উভয়ের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য লক্ষ করা যায়, যেমন—
1. উচ্চতাগত অবস্থান (Altitudinal position):
মেঘ ঊর্ধ বায়ুমণ্ডলে সৃষ্টি হয়। নিম্ন মেঘের ন্যূনতম উচ্চতা। 2 কিলোমিটার বা তার কাছাকাছি।
কিন্তু কুয়াশা ভূপৃষ্ঠের নিকটস্থ নিম্ন বায়ুমণ্ডলে অবস্থান করে। অনেক সময় মেঘ ঊর্ধ্বাকাশ থেকে নীচের দিকে নেমেও আসে। কিন্তু কুয়াশা ভূমিভাগ থেকে বেশি ওপরে কখনোই উঠতে পারে না।
2. উৎপত্তির বৈচিত্র্য (Varlation of genesis):
জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু ওপরের দিকে উঠে গেলে ঊর্ধ্বাকাশে তা আয়তনে প্রসারিত হয়। এই বায়ু তখন তাপবিযুক্ত প্রক্রিয়ায় (adiabatic process) শীত ও ঘনীভূত হয়ে মেঘের সৃষ্টি করে।
অন্যদিকে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন এলাকায় ভিন্ন উপায়ে কুয়াশার উৎপত্তি হ্যা। তাপ বিকিরণের মাধ্যমে শীতল ভূমিভাগের সংস্পর্শে ঊন্ন বায়ু উপস্থিত হলে অথবা উচু বায়ু ও শীতল বায়ুর সংমিশ্রণের ফলে ঘনীভবন ঘটলে কুয়াশার সৃষ্টি হয়।
3. দৃশ্যমানতার বৈচিত্র্য (Variation of visibility) :
কুয়াশার ক্ষেত্রে অনুভূমিক দৃশ্যমানতা 1 কিলোমিটারেরও কম হয় (Byers, 1944) আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংকতেও (International Meteorological Code) এই সত্যতা স্বীকার করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঘন কুয়াশার জন্য কয়েক মিটার দূরবর্তী বস্তুকেও প্রত্যক্ষ করা যায় না (Stringer, 2003)
অন্যদিকে মেঘ ঊর্ধ্বাকাশে সংগঠিত হয়। তাই এক্ষেত্রে অনুভূমিক দৃশ্যমানতা পরিমাপ করা বেশ কঠিন। তবে ঘন মেঘে দৃশ্যমানতা খুবই কম হয়, যা বিমান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটায়।
4. আবহাওয়ার বৈচিত্র্য (Variation of weather):
ভূপৃষ্ঠ ও সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলে কুয়াশা বিশেষ কোনো রূপ বা আকৃতি (form) নিয়ে অবস্থান করে না। কুয়াশার সঙ্গে ঝড়-বৃষ্টিরও কোনো প্রকার সম্পর্ক নেই। তবে নিম্নস্তরের কুয়াশা শীতল ভূমিভাগের সংস্পর্শে এসে শিশির বা তুহিনেও রূপান্তরিত হতে পারে। সকালবেলা সূর্যতাপের প্রভাবে কুয়াশা ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যায়।
কিন্তু মেঘ বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন আকৃতি নিয়ে অবস্থান করে। মেঘ থেকে বৃষ্টিপাতের সৃষ্টি হয়। ঝড়, ঘুর্ণবাত ইত্যাদি বায়ুমণ্ডলীয় বিক্ষোভে মেঘের অবদান অপরিসীম। রোদ থাকলেও আকাশে মেঘের লেশ বিরাজ করে।।
Comments
Post a Comment