Class 9: নবম শ্রেণীর প্রথম অধ্যায় "গ্রহরূপে পৃথিবী"কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর Part -2
1.'জিয়ড'কাকে বলে ?
'জিয়ড' শব্দটি ১৮১৮ সালে প্রথম ব্যবহার করেন জোহান কাল ফেডারিক গাউস। গ্রিক শব্দ geo ও eidos মিলে Geold শব্দের উৎপত্তি geo শব্দের অর্থ পৃথিবী এবং eidos শব্দের অর্থ দেখতে বা দেখা । জিয়ড শব্দের আভিধানিক অর্থ পৃথিবী সদৃশ বা পৃথিবীর মতো দেখতে ।
পৃথিবীর আকৃতি সম্পর্কে কৃত্রিম উপগ্রহের পাঠানো ছবিতে দেখা যায় পৃথিবীর দক্ষিণ মেরু চাপা, কিন্তু উত্তর মেরু চাপা নয়। উত্তর মেরু ২০ পৃথিবীর ছি স্ফীত। পূর্ব শষ্ট্যগুলিয়া তাঁর তয়ে মিটার উঁচু, দক্ষিণ মেরু ২০ মিটার নীচু। উত্তর গোলার্ধের মধ্যবর্তী অক্ষাংশ ৮ মিটার বসে গেছে এবং দক্ষিণ গোলার্ধের পৃথিবীর আকৃতি পৃথিব মধ্যবর্তী অক্ষাংশ ৮ মিটার ফুলে উঠেছে। -এর উচ্চতা ৮,৮৪৮ মি সুতরাং পৃথিবীর আকৃতি কোনো বস্তুর মারিয়ানাখাতের চ্যালে সাথে তুলনীয় নয়। পৃথিবীর গড় অবস্থা বা আকৃতি বোঝাতে ‘জিয়ড’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। মহাদেশগুলির ওপর দিয়ে খাল কেটে মহাসাগরগুলি যুক্ত করলে সারা পৃথিবীব্যাপী একটি গড় সমুদ্রতল বা জল পৃষ্ঠদেশবিশিষ্ট পৃথিবীর অবয়ব পাওয়া যায়। এইরূপ গোলাকার সমঅভিকর্ষজ পৃষ্ঠদেশবিশিষ্ট পৃথিবীকে ‘জিয়ড’ বলে ।
2. জিয়ড'এর বৈশিষ্ট্য:
●গড় সমুদ্রতলবিশিষ্ট পৃথিবীকে ‘জিয়ড’ বোঝায়।
● জিয়ড পৃষ্ঠে অভিকর্ষজ আকর্ষণ সর্বত্র সমান হয়।
3.ধূমকেতু কী?
সৌরজগতের হিমশীতল প্রান্ত ভাগগুলির নাম যথাক্রমে কুইপার বেল্ট, ডট ক্লাউড প্রভৃতি। এই হিমশীতল প্রান্তভাগ থেকে পরিক্রমণ পথ পরিবর্তন করে সূর্যের দিকে ছুটে আসা জ্যোতিষ্কগুলিকে ধূমকেতু বলে। সূর্যের কাছে এলে উত্তাপ বাড়ায় এর ছুটন্ত দেহের পেছনের বাষ্পগুলিকে লেজ বা ঝাড়ুর মতো দেখায়।
4. বামন গ্রহ ও কুলিন গ্রহের মধ্যে পার্থক্য ?
বামন গ্রহ ও কুলিন গ্রহের মধ্যে পার্থক্য গুলি হল---
১. বামন গ্রহের সংখ্যা পাঁচটি।
Or
কুলিন গ্রহের সংখ্যা আটটি
২. সেরেস ছাড়া বাকি বামন গ্রহ সূর্য থেকে দূরে অবস্থিত।
Or
কুলীন গ্রহগুলি সূর্যের নিকটে অবস্থিত।
৩. বামন গ্রহগুলি ক্ষেত্রমানে ছোটো।
Or
কুলীন গ্রহগুলি ক্ষেত্রমানে বড়ো।
৪.বামন গ্রহগুলির কোনো উপগ্রহ নেই।
Or
বুধ, শুক্র ছাড়া অন্য কুলীন গ্রহগুলির উপগ্রহ আছে।
৫. নিজ কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হয়।
Or
নিজ কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হয় না।
5.কোন কোন গ্রহকে "রাক্ষুসে গ্রহ" বলা হয় ?
বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন এই চারটি কুলীন গ্রহের আকার তথা ক্ষেত্রমান বড়ো হওয়ায় এদের রাক্ষুসে গ্রহ বলে।
6.মাগেলান কী ধরনের পরীক্ষার পর বুঝেছিলেন যে পৃথিবী গোলাকার ?
পর্তুগিজ নাবিক ম্যাগেলান পূর্ব থেকে পশ্চিমে জাহাজ চালিয়ে যেখান থেকে সমুদ্র যাত্রা শুরু করেছিলেন তিন বছর পর সেখানেই ফিরে এসেছিলেন ।পৃথিবী গোল না হলে তিনি ওই একই স্থানে ফেলতে পারতেন না । এর মাধ্যমে তিনি বুঝেছিলেন যে পৃথিবী গোলাকার ।
7. দিগন্তরেখা বলতে কী বোঝো?
সমুদ্রের ধারে বা ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে চারীদিকে তাকালে মনে হয় আকাশ ও ভূমি যেন বৃত্তরেখায় মিশেছে । এই বৃত্তরেখা কে দিগন্তরেখা বলে ।ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে উঠা যায় দিগন্তরেখার পরিধিও তত বাড়ে ।
8. পৃথিবীর আকৃতির ওপর কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাব ?
পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্য সৃষ্ট কেন্দ্রাতিগ বল বা কেন্দ্রবহির্মুখী বলের প্রভাব নিরক্ষীয় অঞ্চলে সর্বাধিক হওয়ায় বস্তুসমূহ বাইরের দিকে বেরিয়ে যেতে চাই । অপরদিকে ,দুই মেরুতে আবর্তনের বেগ সবচেয়ে কম হওয়ায় সেখানে কেন্দ্রাতিগ বলের কোন প্রভাব দেখা যায় না । এই কারণে পৃথিবীর মধ্যভাগ ও দুই মেরু অঞ্চল চাপা হয় অর্থাৎ পৃথিবীর আকৃতি অভিগত গোলক ।
9. পৃথিবীর নিরক্ষীয় ব্যাস ও মেরু ব্যাস সমান নয় কেন ?
পৃথিবীর আবর্তনের বেগ নিরক্ষীয় অঞ্চলে সর্বাধিক হাওয়ার জন্য কেন্দ্রবহি:মুখী শক্তি প্রভাবে নিরক্ষীয় প্রদেশ বেশি স্ফীত এবং মেরু প্রদেশে এই বেগ সবচেয়ে কম হওযায় সেখানে অধিক কেন্দ্রমুখী শক্তির কারণে দুই মেরু প্রদেশ চাপা হয়েছে ।
10.Global Positioning System বা GPS কী /কাকে বলে?
মহাকাশে প্রেরিত কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে ভূপৃষ্ঠের কোনো স্থানেরঅক্ষাংশ, দ্রাঘিমা, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা এবং সময় অর্থাৎ উক্ত স্থানের অবস্থান নির্ণয়ের ব্যবহৃত প্রযুক্তিকে Global Positioning System বা সংক্ষেপে GPS বলে।
পৃথিবীব্যাপী 24টি কৃত্রিম উপগ্রহের সংখ্যা |
পার্কিনসন, এসটন ও গেটিং এই ব্যবস্থার প্রচলক GPS র মূল দুটি অংশ-
(১) পৃথিবীকে প্রদক্ষিণরত ২৪টি কৃত্রিম উপগ্রহ,
(২)কৃত্রিম উপগ্রহের সিগন্যাল বা সংকেত থেকে তথ্য সংগ্রহকারী GPS রিসিভার বা গ্রাহক যন্ত্র। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২০ হাজার কিলোমিটার ওপরে ৬টি নির্দিষ্ট কক্ষপথে ২৪টি কৃত্রিম উপগ্রহ প্রতি ২৪ ঘণ্টায় দুবার করে পৃথিবীকে আবর্তন করছে। কৃত্রিম উপগ্রহের কক্ষপথ এমনভাবে নির্দিষ্ট করা হয়েছে যাতে পৃথিবীর প্রতিটি স্থান প্রতি সময় কক্ষপথে চারটি কৃত্রিম উপগ্রহের সামনে আসে। উপগ্রহ চারটি পৃথিবীর প্রতিটি স্থানের যথাক্রমে অক্ষাংশ, দ্রাঘিমা, উচ্চতা ও সময়ের তথ্য প্রদান করতে সমর্থ হয়। বর্তমানে বিশ্বে ৩৯টি GPS স্যাটেলাইট আছে যার মধ্যে কার্যকরী ২৪টি।
11.GPS এর উল্লেখযোগ্য ব্যবহার -----
নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলিতে GPS ব্যবহার করা হয়-
● যান চলাচলে : ট্রেন, বিমান, জাহাজ এমনকি ছোটো যানবাহনগুলিতেও GPS ব্যবহার করা হয়। GPS-এর সাহায্যে যানটি কোথায় আছে তা সহজেই জানা যায়।
●গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে : GPS থাকলে বর্তমানে যানটি কোথায় আছে। তা জানা যায়। যানটির গতিবেগ হিসাব করে গন্তব্যস্থলে অপেক্ষমান ব্যক্তিকে কখন যানটি পৌঁছোবে তা বলা যায়। এমনকি গন্তব্যে পৌঁছোনোর একাধিক পথও দেখায় GPS ।
● উদ্ধারকার্যে : GPS প্রযুক্তির সাহায্যে দুর্ঘটনাস্থল চিহ্নিত করা যায়। তাই দ্রুততার সাথে উদ্ধারকার্য সম্পন্ন হয় এবং ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া সহজ হয়।
●অপরাধ দমনে : GPS-এর সাহায্যে মোবাইল ফোনের অবস্থান থেকে অপরাধীদের ধরা যায়। অপরাধ দমনে GPS উল্লেখযোগ্য মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
●জরিপ কাজে ও মানচিত্র প্রস্তুতে : বর্তমানে DGPS (Digital Global Positioning System)-এর সাহায্যে নির্ভুলভাবে জরিপ কাজ করার ফলে যথাযথ মানচিত্র আঁকা যায়।
●প্রতিরক্ষায় : দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় GPS-এর ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। GPS-এর মাধ্যমে বৈদেশিক আক্রমণকারীদের সঠিক অবস্থান নির্ণয় সম্ভব হয়। ফলে প্রতিরক্ষা মজবুত হয়।
●মৎস্য আহরণে : GPS-এর সাহায্যে সমুদ্রে মাছের সমাবেশ জানা যায় ইলেকট্রনিক গেজেটে GPS-এর ব্যবহার এবং মাছ ধরার সুবিধা হয়।
Comments
Post a Comment